প্রকাশিত: Thu, Feb 16, 2023 11:03 AM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 2:28 AM

একুশে পদক : তুমি কার!

খালিদ খলিল : একুশে পদক খুব মূল্যবান। তবে তা বারবার কলঙ্কিত। এই কলঙ্কের দায়ভার কার? তাদের আমরা চিনি না। তারা যোগ্য ব্যক্তিদের মাঝেও যে অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করেন এবং শেষ পর্যন্ত তারা পদক পেয়েও যান। তার প্রমাণ আমরা বিগত বছরগুলোতে পেয়েছি। পদক দেওয়ার পরও দু’একটি ক্ষেত্রে সরকার সেই পদক বাতিল করেছে। তার মানে কী? পদক প্রাপ্তির যোগ্যতা যাচাইয়ে যারা টেবিলে বসেন, তারা কি তাহলে অযোগ্য? তা না হলে রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপি হুবহু কপি করে নিজের নামে প্রকাশ করে সঙ্গীতে একুশে পদক পান। এই ব্যক্তির তো জালিয়াতি কেসে দণ্ড হওয়ার কথা। ১৪ লাইনের কবিতা লিখে যেখানে ৩৬টি বানান ভুল, তিনি কীভাবে একুশে পদক পান? যদিও পরে তা বাতিল হয়। তার মানে কী? তার মানেই তো অযোগ্য ব্যক্তিরা বারবার এই একুশে পদককে কলঙ্কিত করছেন নয় কি? সারা জীবন প্রবাসে থেকে একটি মৌলিক কবিতার বই এবং কয়েকটি বিদেশি ভাষার বই বাংলায় অনুবাদ করে, প্রবাসে বাংলা ভাষা প্রচারের জন্য ভাষায় একুশে পদক পান। 

কারা এগুলোকে নমিনেশন দেন, ওই যে অযোগ্য ব্যক্তিরা। বারবার দেখেছি, এই একুশে পদক নিয়ে সরকারকে বিব্রত করতে। বাজারে তৈলের দামে আগুন। কিন্তু একুশের জন্য খুব সস্তা। ২০২৩ সালে সম্মানিত পদক প্রাপ্তদের মধ্যে একুশে পদক পাওয়ার জন্য দু’চারজনের অবদান কী, আমরা বুঝতে পারলাম না। বুঝতে পারলাম না, অবদান মাপার নিক্তি কী? অন্যদের জন্য অভিনন্দন। আজকাল অনেক গুণীজনই বলে থাকেন, একুশে, স্বাধীনতা পদকের দরকার নেই ভাই। জানামতে, এদেশে অনেক সঙ্গীতজ্ঞ আছেন, সঙ্গীতে যাদের অবদান বা তাদের সৃষ্টি এক একটি একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক। জনগণের পদকে, ভালোবাসায় যাদের একাধিক ‘ভালোবাসার শোকেস’ ভর্তি। সম্প্রতি জনৈক বাংলাদেশি একজন সঙ্গীতজ্ঞ কানাডায় প্রাদেশিক পার্লামেন্টে প্রাপ্ত সম্মান রাখার জন্য যে শোকেস দরকার তা তার নেই, নেই মানে এর ভার অনেক বেশি। বিদেশের পার্লামেন্টে সম্মান পেলেন, আমরা অভিনন্দনটুকু জানাতে ব্যর্থ হলাম। 

সরকারের পক্ষে সে দেশের বাংলাদেশি কোনো কূটনীতিক পর্যন্ত অভিনন্দন জানালেন না। অথচ তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দেশে-বিদেশে তাঁর সৃষ্টি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দেশের গান, মাটির গান, দেশের মুক্তিযুদ্ধ সময়কালীন গান নিয়ে  যিনি অবিরত কাজ করে চলেছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার কাজ করেছেন। শুধু বলি আমরা নির্লজ্জ, অকৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ টেলিভিশন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে যার কাজ নিয়ে ধন্য, সেখানেই তাঁকে চেনে না, কিন্তু কানাডার পার্লামেন্ট ঠিকই চিনল তাঁকে। সুতরাং একুশে পদক: তুমি কার? খুব জানতে ইচ্ছে করে। আমার মরণ যাত্রা যেদিন হবে, মরণোত্তর পদক নিয়ে আসিও না তোমরা ভাই।